ই-লানিং প্লাটফর্ম

নিরাপদ অভিবাসন



সঠিক অভিবাসন প্রধানত নির্ভর করে যথাযথ অভিবাসন প্রক্রিয়ার ধাপগুলো অতিক্রম করা এবং প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের ওপর। মহিলা অভিবাসী কর্মীদের নিরাপদ অভিবাসনের পূর্বশর্ত হিসেবে অবশ্যই তাদের কর্মস্থলের ঝুকিসমূহ এবং নারীবিষয়ক জটিলতা সম্পর্কিত বিষয়াদি সম্পর্কে সম্যক ধারণা লাভ প্রয়োজন। এ বিষয়গুলো প্রাক বহির্গমন, কর্মস্থলের পরিবেশ ও অভিবাসন পরবর্তী সময়ে প্রবাস ফেরত ও সামাজিকভাবে পুনঃএকত্রীকরণের ধাপ রয়েছে যার মধ্যে নিম্নবর্ণিত বিষয়গুলো অন্তর্ভূক্তঃ
১। অভিবাসনের লাভ ক্ষতি মূল্যায়ন
২। অভিবাসনের বৈধ পন্থাসমূহ
৩। দেশে অর্থ প্রেরণ ও প্রেরিত অর্থের ব্যবস্থাপনাঃ
       ক) ব্যাংক একাউন্ট
       খ) দেশে অর্থ প্রেরণ পদ্ধতি
       গ) হুন্ডির মাধ্যমে অর্থ প্রেরণের ঝুঁকিসমূহ
       ঘ) অর্জিত অর্থের সঠিক ব্যবহার।
৪। অভিবাসী কর্মীদের সুরক্ষার জন্য অধিকার ও ব্যবস্থা
৫। অভিবাসন প্রক্রিয়ার সাথে সম্পৃক্ত প্রচলিত আইন-কানুন
৬। পাসপোর্ট করার নিয়ম ও পদ্ধতি
৭। কর্মসংস্থান ভিসার মাধ্যমে ভ্রমণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসমূহ
৮। নিয়োগ চুক্তি
৯। নিয়োগের মাধ্যমে
১০। প্রাক অভিবাসন প্রশিক্ষক ও ব্রিফ্রিং
১১। অভিবাসন প্রক্রিয়ার অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা।

১। অভিবাসনের লাভ ক্ষতি মূল্যায়নঃ
    ক. লাভ

  • অধিক আয়ের সুযোগ
  • পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির সুযোগ
  • জীবনযাপনের মান উন্নত করতে পারা
  • উন্নত কাজের পরিবেশ
  • সঞ্চয়ের সম্ভবনা
  • দেশে ফেরার পর বিনিয়োগ, জমিজমা, অর্থকড়ির মালিক হতে পারা  এবং জীবনযাপনের সামগ্রিক মান বৃদ্ধি করতে পারা।

খ. ক্ষতি

  • সামাজিক বিচ্ছেদ
  • পারিবারিক বিচ্ছেদ
  • মানসিক চাপ
  • দাম্পত্যজীবনে বিচ্ছেদ ও জটিলতা
  • কঠোর কর্মজীবন ও দক্ষতার অভাবজনিত দুর্ভোগ
  • পাচারের ঝুঁকি।

২। নিম্নবর্ণিত মাধ্যমে বৈধ অভিবাসন হয়ে থাকে
(১) জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো। (সম্পূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং কোনো ফি গ্রহণ করা হয় না)
(২) বাংলাদেশ ওভারসিজ এমপয়মেন্ট সার্ভিসেস লিমিটেড (বোয়েসেল)। (আধা সরকারি প্রতিষ্ঠান)
(৩) রিকুটিং এজেন্সি (ট্রাভেল এজেন্সি নয়)
(৪) ব্যক্তিগত পর্যায়ে সংগৃহীত ভিসার মাধ্যমে
(৫) বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী কোম্পানীসমূহের মাধ্যমে।

৩। নিরাপদ ও বৈধ অভিবাসন প্রক্রিয়াঃ
একজন অভিবাসন প্রত্যাশী কর্মীর জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো হতে বৈধ রিকুটিং এজেন্সির তালিকা পরীক্ষা করা প্রয়োজন। সরকার কর্তৃক বিমান টিকেটসহ নির্ধারিত সর্বোচ্চ অভিবাসন ব্যয় ২০,০০০.০০ (বিশ হাজার) টাকা। কোনো কোনো দেশের জন্য বিশেষ অভিবাসন ব্যয় নির্ধারণ করা হয়।

বৈধ অভিবাসনের জন্য নিম্নবর্ণিত কাগজপত্রসমূহ প্রয়োজন হয়ে থাকে-
১) চুক্তিপত্র
২) বিএমইটি হতে বর্হিগমন ছাড়পত্র
৩) ভিসা

৪। দালাল বা মধ্যস্বত্বভোগীদের থেকে নিরাপদ থাকার উপায়ঃ

  • বিএমইটি হতে বৈধ রিকুটিং এজেন্সির তালিকা পরীক্ষা করা
  • বিনা রসিদে কাউকে কোনো অর্থ প্রদান না করা
  • চাকরির চুক্তি, বেতন ভাতাদি ও অন্যান্য শর্তাদি বর্ণনা সম্বলিত চাকরির  চুক্তিনামা নিয়োগকর্তা/ক্ষমতাপ্রাপ্ত রিকুটিং এজেন্সির স্বাক্ষরিত হতে হবে।
  • রিকুটিং এজেন্সিকে অগ্রিম অর্থ প্রদান করা সমীচীন হবে না।
  • রিকুটিং এজেন্সির নিকট থেকে চুড়ান্তভাবে যাত্রার পূর্বেই পাসপোর্ট, ভিসা, বহির্গমন ছাড়পত্র, টিকেট, চাকরির চুক্তিপত্র ইত্যাদি সংগ্রহ করতে হবে।

অভিবাসী কর্মীদের অধিকার রক্ষায় এবং অভিবাসন প্রক্রিয়া পরিচালনার জন্য বাংলাদেশে রয়েছে বহির্গমন অধ্যাদেশ ১৯৮২। এ ছাড়া রয়েছে জাতিসংঘ কনভেনশন (পরিশিষ্ট-২)। প্রবাসীদের কল্যাণমূলক কর্মকান্ড, রিকুটিং এজেন্সি নিয়ন্ত্রণ এবং বহির্গমন প্রক্রিয়া সম্পর্কিত বিষয়ে ২০০১ সালে তিনটি এসআরও জারি করা হয়েছে। সমপ্রতি বাংলাদেশ বৈদেশিক কর্মসংস্থান নীতি প্রণয়ন করা হয়েছে।

Back